আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গণভোটে চারটি বিষয়ের উপর একটিমাত্র প্রশ্নে ভোটাররা ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে মতামত জানাতে পারবেন।
সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘হ্যাঁ’ ভোটে যা হবে
সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ সূচক হলে কী হবে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান জানান, গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ সূচক হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে।
এই প্রতিনিধিরা একইসঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিষদ তার প্রথম অধিবেশনের শুরু তারিখ থেকে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চ কক্ষ গঠন করা হবে। এর মেয়াদ হবে নিম্ন কক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।
পরবর্তী সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে না
গণভোটে বিএনপির ভিন্নমতের বিষয়গুলো ‘হ্যাঁ’ ভোটে পাশ হলেও তা পরবর্তী সরকারের জন্য তেমন কোনো চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন লেখক এবং দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক গবেষক আলতাফ পারভেজ। বৃহস্পতিবার টেলিফোন আলাপে যুগান্তরকে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
আলতাফ পারভেজ বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন’ আদেশে যেসব বিষয় রয়েছে তার সবকিছু পরবর্তী সরকারকে বাস্তবায়ন করতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা তৈরি করে না। তারপরও সেখানে তেমন মৌলিক কিছু নেই। শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন, করারোপের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ভূমি সংস্কার— এমন বিষয়গুলো থাকলেও তা নিয়ে সবার মাথাব্যথা থাকত।
জনগণের তেমন মাথাব্যথা নেই
তিনি আরও বলেন, এখন যা ‘জুলাই সনদে’ আছে বা যেসব গণভোটে যাচ্ছে তা নিয়ে সাধারণ মেহনতী মানুষের কিছু আসে যায় না। এজন্য এটা নিয়ে জনগণের তেমন কোনো মাথাব্যথা নেই, রাজনৈতিক দলগুলোর মাথাব্যথা রয়েছে।
তাঁর মতে, ‘জুলাই আদেশে’ গণভোটের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করলে মনে হয় জামায়াতসহ তাদের মিত্রদের কথা বেশি শোনা হয়েছে। এটা এক ধরনের রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। তবে এটা রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নিলেও পরবর্তী সরকারের জন্য তেমন কোনো বাধা হবে না।
সংবিধান সংশোধনের সুযোগ থাকবে
বিএনপির ভিন্নমতের কিছু বিষয় গণভোট গেছে। সেখানে যদি ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হয় এবং সংসদে বিএনপির দুই-তৃতীয়াংশ আসন পায়, তখন বিএনপি চাইলে তো নতুন করে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিতে পারে বলে মন্তব্য করেন আলতাফ পারভেজ।
পাশাপাশি ভূমিধস বিজয় অর্জন করলেও উচ্চ কক্ষ বিএনপি বা যেকোনো একটি দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে। তখন তারা যা চাইবে সেই পরিবর্তনই করতে পারবে।
গণভোটের বিষয়গুলো পরিবর্তনের সুযোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আলতাফ পারভেজ বলেন, এখানে জুলাই আদেশ, গণভোট সংক্রান্ত বিষয় অনেক দ্বিমত রয়েছে। কোনো দলকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করা মানেও জনগণ তাকে ম্যান্ডেট দিল। তখন ঐ সরকার তাদের মতো করে পরিবর্তন কেন করতে পারবে না?
তিনি বলেন, সামনে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে, তারপর সবকিছু পরিষ্কার হবে।