নির্বাচন কমিশনে হট্টগোল: রুমিন ফারহানা, বিএনপি ও এনসিপি’র সংঘর্ষে উত্তেজনা

ঢাকা | ২৫–২৬ আগস্ট ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ বিষয়ক শুনানিতে হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) উপস্থিতিতেই এই মারামারি ঘটে, যা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা ঘিরে।

কীভাবে ঘটল সংঘর্ষ?

  • রবিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের নতুন সীমানা নিয়ে শুনানি শুরু হয়।
  • বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রস্তাবিত খসড়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
  • অপরদিকে, ন্যাশনালিস্ট কনভেনশন পার্টি (এনসিপি) এর নেতারা এর বিরোধিতা করেন।
  • সংক্ষিপ্ত বাকবিতণ্ডা দ্রুত ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে রূপ নেয়।
  • সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন ও কমিশনারদের সামনে ইসি কর্মকর্তারা ও পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেন।
  • শুনানি স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

রুমিন ফারহানার প্রতিক্রিয়া

“১৫ বছরে যা হয়নি, তা আজ হলো যে বিএনপির জন্য লড়েছি, সেই বিএনপির নেতারাই আমাকে ধাক্কা দিল।”
— রুমিন ফারহানা

তিনি অভিযোগ করেন, তিনি ভদ্রলোক নিয়ে এসেছিলেন, গুন্ডা নয়, অথচ প্রতিপক্ষ থেকে তাকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। তিনি এটিকে দেশের রাজনীতির জন্য অশনি সংকেত বলেও আখ্যা দেন।

এনসিপি’র অভিযোগ

  • এনসিপি নেতা আতাউল্লাহ দাবি করেন, রুমিন ও তার সমর্থকেরা তাদের ওপর আক্রমণ করেছে।
  • তার পোশাক ছিঁড়ে যায় এবং হাতে আঘাত পান বলে অভিযোগ করেন।
  • তিনি লিখিতভাবে ইসি সচিব বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেছেন।
  • এনসিপি নেতারা বলেন, এই ঘটনা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের অস্থিরতার বার্তা দিচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ

ঘটনার সময় নির্বাচন কমিশনের ভেতর যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন উঠছে—

  • যদি ইসির নিজ ভবনেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়, তবে
  • সারাদেশের হাজার হাজার ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা হবে?

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন:

  • এই সংঘর্ষ বিএনপি’র ভেতরকার বিভাজন ও জোট রাজনীতির টানাপোড়েন স্পষ্ট করেছে।
  • আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরও সংঘাত দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
  • বিএনপি ও এনসিপি’র পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ভবিষ্যৎ নির্বাচনে ক্ষমতার সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এই হট্টগোল শুধু একটি শুনানির ঘটনা নয়; বরং এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, নেতৃত্ব সংকট ও নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা সবগুলো প্রশ্নের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনের আগে এ ধরনের সংঘর্ষ ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য অশনি সংকেত হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top